প্রতিবছর শারদীয়া পত্রিকা গুলির গুণমান আলোচিত হয় সেই পত্রিকার উপন্যাস বা বড় গল্পগুলিকে দিয়ে। বিগত কয়েক বছরে শারদীয়া পত্রিকার সংখ্যা বহু গুনে বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় পাঠক ভালো ভালো প্রবন্ধ গুলি মিস করে যায়। অথচ ভেবে দেখুন ৯০ এর দশকে আমরা যখন আনন্দমেলা পড়তাম তখন হিমানীশ গোস্বামী অথবা পথিক গুহর বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ গুলি পড়া ছিল মাস্ট। লক্ষ্য করে দেখেছি নতুন পাঠকদের মধ্যে নন ফিকশন থেকে ফিকশন পড়ার দিকে ঝোঁক টা বেশি, তাই গল্প বা উপন্যাসের থেকে প্রবন্ধের জনপ্রিয়তা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম।
প্রতিষ্ঠিত লেখকেরা সেই জন্যই গল্প বা উপন্যাস লিখতেই বেশি পছন্দ করেন, আর ঠিক এই জায়গাতেই একটি রিস্ক নিয়েছেন লেখক তমোঘ্ন নস্কর এবং শারদীয়া অরণ্য মন পত্রিকায় সেই লেখাটি পড়ার পর নিশ্চিন্তে বলা যায় তিনি সসম্মানে উৎরে গেছেন। শ্রীশচন্দ্র ন্যায়বানের গল্পগুলি হোক অথবা দেখি বাংলার মুখের মত বইয়ে শেষ কয়েক বছর ধরে লেখক ফিরিয়ে নিয়ে আসছেন বাংলার হারিয়ে যাওয়া লোককথা এবং সংস্কৃতি। এর মধ্যে অবশ্যই প্রচন্ড জনপ্রিয় শ্রীশচন্দ্র ন্যায়বানের দেও বা বিষহরি। কিন্তু বাংলার লোককথার সমস্ত আখ্যানে তো আর অলৌকিকতার আশ্রয় নেওয়া যায় না, তাই এবার তিনি নিয়ে এলেন ভূপেন্দ্রনাথ গোঠ বিশ্বাস ওরফে বাবাঠাকুরকে। তার মুখ দিয়ে তিনি শোনালেন এক অপ্রচলিত মাতৃপূজন। বনদূর্গা। তার উৎপত্তি, তার পূজন পদ্ধত্তি, তার মাতৃরূপ কল্পনা। জানলাম তার গৃহী এবং রাজ পূজার পার্থক্য। অসম্ভব তথ্যসমৃদ্ধ একটি লেখা। কিন্তু ওই যে, বাবা ঠাকুরের মুখে শোনা ওই গল্প শুনে কখনোই মনে হচ্ছিল না একটা শুকনো প্রবন্ধ পড়ছি। মনে হচ্ছিল তার সামনে বসেই শুনছি সেই গল্প।
দারুন। দারুন।
Comments