অডিটিং। এই একটা শব্দ শুনলেই চাকুরীজীবী মাত্রই গায়ে জ্বর আসে। অদ্ভুত অদ্ভুত এভিডেন্স, অদ্ভুতুড়ে আর্টিফ্যাকট জোগাড় করতে করতে জীবন জেরবার হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি রাগ গিয়ে পড়ে সেই অডিটার ভদ্রলোক বা ভদ্রমহিলার ওপর। কিন্তু কখনো কি আমরা ভেবে দেখেছি সেই অডিটরের তরফের চাপ বা কর্তব্য। আমি অন্তত অতটা ভেবে দেখিনি যতদিন না আমার হাতে এসে পৌঁছেছিল সোমনাথবাবুর এই পান্ডুলিপি। সিরিয়াস থ্রিলার এর বড্ড অভাব আমাদের বাংলা সাহিত্যে। আশা করি সেই অভাব মিটিয়ে দিতে পারবে এই বইটি। আসছেন রনি, তার প্রথম কয়েকটি কর্পোরেট ফ্রড এক্সপোজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে।
Corporate Fraud !
সারা পৃথিবী জুড়েই এই কোম্পানী-দুনিয়াতে প্রতিদিন ঘটতে থাকে ছোট-বড় নানাধরণের চুরি, জোচ্চুরি – কখনো তাতে যুক্ত থাকেন শীর্ষ কর্পোরেট কর্তা থেকে প্ল্যান্ট ম্যানেজার, কোম্পানীর ক্যাশিয়ার, অফিস ম্যানেজার বা সেলসের লোকজন। অথবা, কখনো কোম্পানীর ডিলার বা এজেন্ট থেকে কোম্পানির সাপ্লায়ার। কর্পোরেট দুনিয়ার এই ‘তৃতীয় রিপু’র প্রকোপ নিয়ে ঘটনাগুলো থাকে খুবই গোপনীয় – অধিকাংশ কোম্পানি এইসব সংবেদনশীল ঘটনাগুলো নিয়ে বাইরে কিছু বলতে চায়না। সাধারণ মানুষের কাছে এ এক অজানা পৃথিবী।
সেই জালিয়াতি দুনিয়ার কিছু থ্রিলার গল্পকে উপজীব্য করে এই নতুন বই ‘ অর্থম অনর্থম’। এই বইয়ের লেখক নিজে পেশায় চার্টার্ড একাউন্টেন্ট এবং তিন দশকের বেশী সময় ধরে বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্পোরেট অডিটর হিসেবে কাজ করছেন । পেশাসূত্রে, লেখক নিত্যদিনের কাজে মানুষের লোভের বিভিন্ন বহিঃ প্রকাশ খুব কাছ থেকে দেখতে পেয়েছেন বা এখনো পান , দেখতে পান মানুষের মুখ ও মুখোশ দুই। যদিও এই গল্পগুলোতে স্থান, পাত্র, নাম পরিবর্তন হয়েছে এবং তাতে মিশে গেছে লেখকের কল্পনাও- তবু দিনের শেষে, ‘ অর্থমনর্থম’আসলে, লেখকের বিগত ৩৪ বছরের নিত্যকার কর্পোরেট অভিজ্ঞতা নিয়েই তৈরি। এই বইয়ে, লেখক টেকনিক্যাল দিকগুলোকে যথাসম্ভব সহজভাবে পাঠকদের সামনে উপস্থিত করতে চেষ্টা করেছেন , যাতে তাঁদের বুঝতে সুবিধা হয় এবং ইংরেজীতে জনপ্রিয় বাণিজ্যিক লব্জগুলোকে ইংরেজিতেই যথাসম্ভব রাখতে চেয়েছেন । বলা বাহুল্য, বাংলা সাহিত্যে এইদিক নিয়ে খুব বেশী কাজ হয়নি।
প্রচ্ছদ : কৃষ্ণেন্দু মন্ডল
Smell of Books Publication
Comments